শিক্ষা, বিনোদন আর নানা অনুপ্রেরণার পাশাপাশি আবেগের ছোঁয়াও থাকে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে। এবারের আয়োজনে সে আবেগের মাত্রা যেন ছিল বরাবরের চেয়ে বেশি। এ কারণে বলা যায় এবার দারুণ আবেগময় একটি ‘ইত্যাদি’ই উপহার পেয়েছেন দর্শকরা। সবচেয়ে বেশি আবেগ ছড়িয়েছে অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে পরিবেশিত নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী বাংলাদেশি নারী আনোয়ারাকে নিয়ে করা প্রতিবেদনটি। পাঁচ
বছরের একটি মেয়ে কিভাবে তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দত্তক শিশু হিসেবে নেদারল্যান্ডসে চলে যায়। এরপর সেখানে ভিনদেশি নতুন বাবা-মার কাছে আদরে লালিত-পালিত হয়।
ভালো একটা বিয়ে হয় তার। এরপর ঘটনার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ থেকে তাকেও সন্তান দত্তক নিতে হয়। সে সঙ্গে যোগ হয়েছে নেদারল্যান্ডসের মাটিতেই তার আপন বোনকে ফিরে পাওয়ার গল্প। যে মানুষটিও দত্তক শিশু হিসেবে নেদারল্যান্ডসেই বেড়ে উঠেছেন সেখানকার একটি পরিবারে। আনোয়ারাকে ঘিরে এমন অন্যরকম আবেগীয় কথামালা বিভিন্ন ফুটেজ এবং আনোয়ারা ও তার স্বামীর সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে অনুষ্ঠানে। আর এর সঙ্গে মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের ফিরে পাওয়ার জন্য আনোয়ারার কান্না জড়ানো আকুতি দারুণ আবেগী করে তুলেছে দর্শকদেরও। এদিকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে প্রতিবেদনটিও ছিল ব্যতিক্রমী আবেগে ভরপুর। হানিফ সংকেত যথার্থই বলেছেন, দুলালের ক্ষমতা কম মমতা বেশি। কারণ দুলাল চন্দ্র দাশ সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও যাত্রীদের সেবায় নিজের সিএনজি অটোরিকশাটিকে যেভাবে আধুনিকীকরণ করেছেন তা সত্যিই বিশাল মমতামাখা চেষ্টার বহির্প্রকাশ। ধন্যবাদ ‘ইত্যাদি’র জনক হানিফ সংকেতকে এমন দুর্দান্ত আবেগময় দুটি প্রতিবেদন এবারের অনুষ্ঠানে উপহার দেয়ার জন্য। সে সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশাচালক দুলাল চন্দ্র দাশের হাতে এক লাখ টাকা তুলে দেয়ায় অভিনন্দন কেয়া কসমেটিকস লিমিটেডকে। এ দুটি প্রতিবেদনের পাশাপাশি সৈয়দ আবদুল হাদির গাওয়া ‘একাত্তরের যুদ্ধের দিনে’ শীর্ষক গান এবং অভিনেত্রী মম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় নাচটিও ছিল বেশ আবেগঘন। এছাড়া পবিত্র নগরী মদিনার আজব পাহাড় ও রাস্তা নিয়ে করা পর্ব এবং এবারের ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত অন্য সব আইটেমও ছিল ভালো লাগার ছোঁয়ায় ভরপুর।